ইয়াছির আরাফাত , সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রতিনিধি :

সংযুক্ত আরব আমিরাতের শহর আজমান। যেখানে বসবাস করে অসংখ্য বাংলাদেশী। এই শহরে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে গড়ে তোলা হয়েছে লেভার কমিউনিটি মার্কেট। আজমান মিউনিসিপ্যালিটির উদ্যোগে পরিচালিত মার্কেট এখন প্রতিদিন পরিণত হয় এক টুকরো বাংলাদেশ।

সন্ধ্যা হলেই যেন লোকে লোকারণ্য। আমিরাতের বিভিন্ন শহর গড়ে ওঠার পেছনে বাংলাদেশী শ্রমিকদের অবদান রয়েছে, তবে এখন সময় পাল্টে গেছে ভারত এবং পাকিস্তানীদের পিছিয়ে ফেলে আজমান সহ বিভিন্ন প্রদেশে শ্রমিক থেকে হয়ে উঠছেন ব্যবসায়ী। আজমানের জার্ফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে মিউনিসিপ্যালিটির উদ্যোগে লেবার কমিউনিটি মার্কেট। যেখানে বাংলাদেশীরা সল্প পুঁজিতে কোন রকম লাইসেন্স না করে হয়ে উঠছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

আজমানে ফ্রুট এন্ড ভেজিটেবল বাজারটি বাংলাদেশী ও অন্য দেশের লোকমুখে প্রচারের কারণে এখন সবার কাছে মার্কেটটি বাঙালি বাজার নামে পরিচিতি পাচ্ছে। মার্কেটি ঘুরে দেখেন আজমানের শাসক পরিবারের সদস্যবৃন্দ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাজার তৈরির মূল উদ্যোক্তা কক্সবাজারের মরিচ্যার মোহাম্মদ জাফর ও বাশঁখালী উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহান আরো উপস্থিত ছিলেন ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতৃবৃন্ধ উপস্থিত ছিলেন আলফাতুন(সিআইপি), ইসমাইল গনি, কাশেম, আজগর, মহিউদ্দিন, সহ আরো অনেকে।

বৃহৎ এই মার্কেটে ছোট বড় সকল ব্যবসায়ী ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী কাঁচাবাজার মাছ মাংস সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সকল সামগ্রী এখানে রয়েছে। স্থায়ীভাবে বাংলাদেশী অনেকেই পরিবার পরিজন নিয়ে আরব আমিরাতে বসবাস করে। অনেক পরিবার কে দেখা যায় এই বাজারে বাজার করতে। এই বাজার গড়ে উঠায় প্রায় ৪০০ বাংলাদেশীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। মরিচ্যার জাফর লোকমুখে একটি পরিচিত নাম হয়ে পড়েছে, বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশীদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে অনুপ্রেরণার একটি নাম কক্সবাজারের মরিচ্যা গ্রামের জাফর আলম ।

আমিরাতের মত উন্নত শহরে কোনোভাবে সহজ কাজ ছিলোনা এটি। বাজারটির অন্যতম উদ্যোক্তা জাফর আলমের সাথে আলাপ করে জানা যায়, করোনাকালীন সময়ে যখন পুরো পৃথিবীর মানুষ বিপর্যস্ত, আমিরাতে ও খেটে-খাওয়া মানুষ গুলো বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছিলো,অনেকের কাজ না থাকায় হুলসেল মার্কেট অথবা দুবাই আবির সবজি মার্কেট থেকে সবজি এনে বিক্ষিপ্তভাবে অলি গলিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গ্রামের হাট বাজারের মত সবজি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপএ বিক্রি করত। মাঝে মাঝে দেখা যেত আমিরাতের আইন শৃংখলা বাহিনীর অভিযানে বিক্রেতাকে জিনিসপত্র সহ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেত, কারণ এভাবে বিক্রি করা আইনত অপরাধ দেশটিতে।

এ ব্যাপারটি তার মনে দাগ কাটে, তিনি ভাবতে থাকেন এই ব্যাপারটার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা কিভাবে করা যায়। এ নিয়ে কাজ করতে থাকেন বন্ধু শাহাজাহান কে নিয়ে। বিভিন্ন অফিস সহ দাপ্তরিকভাবে অনুমোদন প্রক্রিয়ার সময়ক্ষেপণ হয় র্দীঘদিন।অবশেষে কষ্ট যেন বৃথা যায় না। চলতি বছরের ডিসেম্বরে সরকারী ব্যবস্থাপনায় সরকারি জায়গা বরাদ্দ করে আজমান লেবার কমিউনিটি মার্কেট কার্যক্রম শুরু করে । বাজারটি পেয়ে সাধারণ শ্রমিকরা খুবই খুশি।

তবে বাজারের মূল আকর্ষণ বাংলাদেশী নারী ব্যবসায়ী কয়েকজন নারী মিলে পিঠার দোকান পরিচালনা করছেন বিদেশের মাটিতে। নারী উদ্যোক্তারা বলছেন এমন উদ্যোগের কারনে আমরা কোন ঝামেলা ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছি। এতে করে খুশি প্রবাসী বাংলাদেশীরা । কারন দেশের পিঠা এখন পাচ্ছেন তাদের হাতের নাগালে।প্রবাসীদের বিনোদনের জন্য রাখা হয়েছে গেমের ব্যবস্থা এদিকে বাংলাদেশী মৌসুমী ফলগুলোর ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে দিন দিন, মৌসুমী ফল এবং সবজি ইত্যাদি মার্কেটে পাওয়া যায় বলে সবাই আসছেন এই বাজারে।